২০২১ এর টিভি নাটক, ওটিটি প্লাটফর্ম ও শর্টফিল্ম সব মিলিয়ে আমাদের এই আয়োজন। 

দেখতে দেখতে গেল আরো একটি বছর। গত বছরের সব বিপর্যস্ত কাটিয়ে সবাই আশা বেঁধেছিল,কিন্তু ২০২১ সালেও দেখা দিল করোনার হানা। যার প্রভাব পড়েছে মিডিয়া জগতেও। এর মাঝেও ভালোবাসা দিবস ও দুই ঈদে প্রচারিত হয়েছে বেশ সংখ্যক নাটক, মোটামুটি স্বাস্থ্য সচেতন থেকে সবাই শ্যূটিং করেছেন। যদিও বরাবরের মত ভালো নাটকের সংখ্যা ছিল কম। টিভি নাটকের চেয়ে এই বছর দর্শকদের আগ্রহের তালিকায় বেশি ছিল ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে। একের পর এক কাজ ওয়েবে মুক্তি পেয়েছে। দেশীয় প্লাটফর্ম হিসেবে বেশ প্রচারনা করেই এলো চরকি প্লাটফর্ম। কম বেশি অনেক ওয়েব ফিকশনই আলোচনায় এসেছে। পাশাপাশি প্রশংসিত হয়েছে বিশেষ ভাবে উদ্যেগ নিয়ে বানানো শর্টফিল্ম সিরিজ।

২০২১ এর টিভি নাটক,ওটিটি প্লাটফর্ম ও শর্টফিল্ম সব মিলিয়ে আমাদের এই আয়োজন। 

সেরা পাঁচ আলোচিত নির্মাতা

১. আশফাক নিপুণ ও মিজানুর রহমান আরিয়ান: নিজের প্রথম ওয়েব সিরিজ 'মহানগর' বানিয়েই দারুণভাবে সফল হলেন আশফাক নিপুণ। এটা এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ। মহানগরের কারনেই বছর জুড়ে দারুণ আলোচিত ছিলেন,এছাড়া বানিয়েছেন ওয়েব ফিল্ম কষ্টনীড়। যদিও এই বছর টিভি ফিকশন  না বানিয়ে দর্শকদের বঞ্চিত করেছেন তিনি। অন্যদিকে নিজের প্রথম ওয়েব ফিল্ম 'নেটওয়ার্কের বাইরে' বানিয়েও বিশাল সাফল্য পেয়েছেন মিজানুর রহমান আরিয়ান। ওয়েব ফিল্ম হিসেবে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয়। প্রচারের পরপরই শুরু হয়ে যায় এই ফিল্ম নিয়ে আলোচনা। এছাড়াও টিভির জন্য আরিয়ান বানিয়েছেন যদি কোনোদিন, নট আউট, যত্ন, শুভ+নীলা, প্রেসক্রিপশন, হ্যালো শুনছেন সহ আরো বেশ কিছু নাটক,শর্টফিল্ম। 

মহানগর এবছরের অন্যতম সফল ওয়েব সিরিজ

২. ভিকি জাহেদ: শুধুমাত্র টিভি নাটকের কথা ধরলে তিনিই থাকবেন সবার শীর্ষে। একেবারে বছরের শুরু থেকেই তিনি ছিলেন দারুন ছন্দে। ক্যারিয়ারের সেরা বছর কাটিয়েছেন বলা যায়। 'চিরকাল আজ' দিয়ে বেশি প্রশংসা পেয়েছেন,অন্যদিকে পুর্নজন্ম সিরিজ নিয়ে ছিল দর্শকদের মধ্যে বেশ আলোচনা। অন্যান্য কাজের মধ্যে ভুলজন্ম, চরের মাস্টার, কায়কোবাদ, তুমি আরেকটি দিন থাকো অন্যতম। ওয়েব তার একমাত্র কাজ শর্টফিল্ম লাল কাতান নীল ডাকাত। 

৩. রায়হান রাফী: ওয়েব ফিল্ম 'জানোয়ার' দিয়ে শুরু করেছিলেন বছরের শুভ সূচনা। বেশ আলোচনা- সমালোচনা হয়েছিল। এর রেশ না কাটতেই ভালোবাসা দিবসে বানালেন 'অথবা প্রেমের গল্প', এটিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। তার নির্মিত বাকি কাজগুলো হলো দ্য ডার্ক সাইড অব ঢাকা, এইডা কেমন কপাল ও খাঁচার ভিতর অচিন পাখি। তিনি মূলত সিনেমার মানুষ, সেখানেও দামাল, পরান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সিনেমাগুলো মুক্তি পাবে ২০২২ সালে। 

৪. সঞ্জয় সমদ্দার: ওয়েব ফিল্ম 'ট্রল' দিয়ে বাজিমাৎ করেন বছরের প্রথম নির্মাণ হিসেবে। পরবর্তীতে সাদাত হোসাইনের উপন্যাস অবলম্বনে বঙ্গ বব আয়োজিত 'মরনোত্তম' টেলিফিল্ম বানিয়ে ভূয়শী প্রশংসা পান। যদিও এই বছর সিনেমা নির্মানের প্রস্তুতির জন্য টিভির জন্য নাটক বানিয়েছেন কম, তার মধ্যে শোকসভা, অ্যান্টি হিরো, নামকরণ আলোচিত হয়েছে। ওয়েবে অমানুষ ও লোহার শিকল আসার কথা থাকলেও মুক্তি পান নি। 

৫. কাজল আরেফিন অমি: বরাবরের মত ব্যাচেলর পয়েন্ট নিয়ে ছিলেন বেশ আলোচনায়। এই সিজনের শেষ পর্ব ছিল দর্শকদের কাছে চর্চিত বিষয়। তবে তার নির্মিত অন্যতম সেরা নাটক হয়ে থাকবে 'আপন', সবাই প্রশংসা করেছিল। ভাইরাল গার্ল, অদ-ভূত, ফি-মেল, ঠান্ডা, দ্য সিক্রেট ছিল কম বেশি আলোচনায়।

বঙ্গ বব আয়োজিত মারুফ রেহমানের উপন্যাস অবলম্বনে গোলাম হায়দার কিসলু 'লাবনী' নির্মান করে অত্যন্ত প্রশংসিত হন, এটি এই বছরের অন্যতম সেরা টিভি ফিকশন। 'বেস্ট ফ্রেন্ড ৩' জনপ্রিয় হওয়ায় আলোচিত হন প্রবীর রায় চৌধুরী। শর্টকাট সিরিজে সাতটি শর্টফিল্ম বানিয়ে সমাদৃত হন শাফায়েত মনসুর রানা। অনেক বছর ধরে নাটক বানালেও সকাল আহমেদ এই বছর নতুন ভাবে আলোচিত হন 'গরম ভাতের গন্ধ' নাটকের জন্য। শিহাব শাহীন এই বছর অনেকগুলো টিভি নাটক ও একটি সিরিজ বানিয়েছেন, কিন্তু সেই তুলনায় প্রত্যাশা মিটিয়েছে বেশ কম। অনেক বছর পর তিনিই একসাথে কাজ করাতে সক্ষম হয়েছেন অপূর্ব- তিশাকে নিয়ে, তাদের অভিনীত 'অহং' নাটকটি প্রশংসা পেয়েছে। ওয়েবে 'মরীচিকা' ও 'যদি কিন্তু তবুও' প্রত্যাশা মিটায় নি, অন্যান্য নাটকের মধ্যে কমলা রঙের রোদ, পাশের বাসার ছেলেটা অন্যতম।

'সুইপারম্যান, ব্রাদার্স ৩, মায়ের ডাক, নিকষিত বানিয়ে আলোচনায় ছিলেন জনপ্রিয় নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ। ঊনলৌকিক সিরিজ বানিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন রবিউল আলম রবি। অনেকদিন পর নির্মানে এলেও 'ইউটিউমার' দিয়ে প্রত্যাশা মিটাতে পারেননি আদনান আল রাজীব। মুস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মাণ করলেন নিজের প্রথম ওয়েব সিরিজ 'লেডিজ এন্ড জেন্টলম্যান'। 

এছাড়া অন্যান্য নির্মাতাদের মধ্যে সাগর জাহান (শেষটা অন্যরকম ছিল), অনিমেষ আইচ (এখানে কেউ থাকে না, আলীবাবা ও চালিচার), ওয়াহেদ তারেক (মিস্টার কে), মহিদুল মহিম (শিল্পী), জিয়াউল হক পলাশ (একটুখানি, রিভেঞ্জ), মাহমুদুর রহমান হিমি (সিদ্ধান্ত, ২১ বছর পরে, আলো), মুস্তফা কামাল রাজ (ফ্যামিলি ক্রাইসিস) ও মনপাচিত্রের সিজু শাহরিয়ার (জুজু), গোলাম মুনতাকিম ফাহিম (কাউয়া), ইশতিয়াক জিহাদ (বিড়াল তপস্যা), ইকবাল কবির খান (আনোয়ারা মনোয়ারা), গৌরব দত্ত মজুমদার (সহজ সুন্দর) অন্যতম।

সেরা পাঁচ আলোচিত অভিনেতা

১. মোশাররফ করিম: সাড়া ফেলে দেয়া ওয়েব সিরিজ 'মহানগর' এ প্রধান চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে যেন আরেকবার প্রমাণ করলেন এই অভিনেতা। সুবর্ণময় ক্যারিয়ারে একটি সফল পালক যুক্ত হলো। উনার মত জনপ্রিয়তা খুব কম তারকাই পেয়েছেন,এই সিরিজের পর তা আরো বেড়েছে বেশ এটা বলা যায়। মহানগর বাদেও 'গরম ভাতের গন্ধ' নাটকে উনার অভিনয়ে দর্শকরা অশ্রুসজল হয়েছেন। অন্যান্য কাজের মধ্যে বদলে যাওয়া মানুষ, সীমার,কাল্লু সুইপার, বকুল ফুল, রাত গভীর হয়, শেষটা অন্যরকম ছিল অন্যতম। 

২. আফরান নিশো: ওয়েব সিরিজ হিসেবে 'মরীচিকা' মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেলেও দর্শকদের সবটুকু সমর্থন আদায় করে নিয়েছিলেন এই অভিনেতা৷ খল চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় ছিল এই সিরিজের প্রাণ,যার কারনে তিনি হয়েছিলেন বেশ আলোচিত। এর বাইরে আপন, পুনর্জন্ম সিরিজ, চিরকাল আজ, ভুলজন্ম, হ্যালো শুনছেন, সিদ্ধান্ত, কায়কোবাদ নাটকগুলোর জন্য টিভি নাটকের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন। অন্যান্য নাটকের মধ্যে জনপ্রিয় হওয়া 'শিল্পী'তে বুক চিন চিন করে গানে তার অভিনয় পৌঁছেছে প্রান্তিক গ্রামেও। 

চিরকাল আজ নাটকের দৃশ্যে নিশো ও মেহজাবীন

৩. চঞ্চল চৌধুরী: ওয়েব জগতে এই মুহুর্তে অন্যতম সেরা মহারথী তিনি। এই বছর খল চরিত্রে বিশেষ আবেদন রেখেছেন কন্ট্রাক্ট ও বলি ওয়েব সিরিজে,তারকাবহুল হলেও তিনিই বেশি দর্শকদের কাছে বাহবা পেয়েছেন। বছর শেষে জাগো বাহে সিরিজের 'শব্দের খোয়াব' শর্টফিল্মেও দেখিয়েছেন অভিনয়ের মুগ্ধতা। ওয়েব ফিল্ম 'মুন্সিগিরি' প্রত্যাশা না মিটালেও তিনি ছিলেন স্বপ্রতিভ। তবে টিভি নাটকে বলতে গেলে অনালোচিত থেকে গেছেন। নিজেদের পুরনো জুটির রসায়ন আর দেখা যায় নি।  

৪. অপূর্ব: বছরের শুরুতেই 'ট্রল' ওয়েব ফিল্ম দিয়ে ভিন্নভাবে হাজির হবার আবাস দিয়েছিলেন। পুরো বছর জুড়েও করেছেন বেশ কিছু ভিন্ন কাজ তার মধ্যে রক্ত, ব্রেকিং নিউজ, যদি কোনোদিন, অহং অন্যতম। নিজে অভিনয়ের শতভাগ দিলেও কোনো কারনে অপূর্ণ থেকে গেছে। নাটক ও নির্মাতা নির্বাচনে আরো সচেতন না হলে সমসাময়িকদের মত তিনি আলো ছড়াতে পারবেন না। বছর শেষে করেছেন মুক্তিযুদ্ধের নাটক 'যোদ্ধা', তবে আরেকটি ওয়েব ফিল্ম 'যদি কিন্তু তবুও' প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ।

৫. মনোজ প্রামাণিক: এই বছর তুমুল প্রশংসিত হয়েছেন 'লাবনী' টেলিফিল্মে অভিনয়ের জন্য। তবে অভিনয়ের বাইরে আলোচনায় এসেছিলেন উনার ছাত্রদের দ্বারা নির্মিত মনপাচিত্রের নিবেদিত সাত দুগুনে চৌদ্দ সিরিজ বানানোর জন্য। সবগুলো শর্টফিল্ম বেশ প্রশংসিত হয়েছে, তাদের নিয়েই বিজয় দিবসে বানিয়েছেন 'গাইবো বিজয়ের ই গান'। তার অভিনীত অন্যান্য কাজের মধ্যে পারাপার, ময়লা ও চৈতন্যের গল্প, কাউয়া, সিগারেট, অতিথি, ভাইরাল গার্ল, আলো অন্যতম।

উদীয়মান তারকা (বিশেষ)- খায়রুল বাসার: নবীনদের মধ্যে এই বছর যারা বেশি উজ্জ্বল ছিলেন,এই তরুন তুর্কি তাদের অন্যতম। ক্লোজআপ কাছে আসার গল্পের 'একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে'র পরেই আলোচনার পারদ বেড়ে যায় তাকে নিয়ে,সেটা আরো পরিনত হয় 'চরের মাস্টার' টেলিফিল্মে প্রধান চরিত্রের অভিনয়ের সুবাদে। বছরের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই ফিকশন মহানগর ও নেটওয়ার্কের বাইরে দুইটিতেই ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়, যেটা একজন নবীন তারকার জন্য বড় পাওয়া। এই মুহুর্তে অভিনয়ে বেশ ব্যস্ত তিনি, বোঝাই যাচ্ছে ক্যারিয়ারের প্রতি একাগ্রতা থাকলে পৌঁছে যাবেন বহুদূর। অন্যান্য কাজের মধ্যে যত্ন, বাঘের বাচ্চা,মাজনু, অ্যা হ্যাপি ম্যান,পুনর্জন্ম ২ অন্যতম।

জোভান ভালোবাসা দিবসে 'বেস্ট ফেন্ড ৩' নাটকের তুমুল জনপ্রিয়তায় নিজের জনপ্রিয়তা আরো বাড়িয়ে নেন, ফলে বছর জুড়েই ছিল নাটকে ব্যস্ততা। টিকটক, ডোন্ট রাইট মি, কাউয়া, বলির জন্য দর্শকদের কাছ থেকে বাহবা পেয়েছেন সোহেল মন্ডল। মুস্তফা মনোয়ার প্রশংসিত হয়েছেন লাইট ক্যামেরা অবজেকশন, যেখানে তিনি অভিনয় করেছেন জহির রায়হানের চরিত্রে। এছাড়া ছিল তার অভিনীত লেডিজ এন্ড জেন্টলম্যান, মরিবার হল তার স্বাদ। মহানগর, আকাশ ভরা তারায় দারুন অভিনয়ে প্রশংসিত হয়েছেন মোস্তাফিজুর নূর ইমরান। 'দ্বিখন্ডিত' শর্টফিল্মে চমকপ্রদ অভিনয় করেছেন ইন্তেখাব দিনার। মহানগর, বলিতে দারুণ অভিনয় করে নাসির উদ্দিন খান দর্শকদের পছন্দের তালিকায় এসেছেন। 

এবছরের অন্যতম আলোচিত ওয়েব কন্টেন্ট ছিল নেটওয়ার্কের বাইরে

ইয়াশ রোহান ও শরিফুল রাজ দুইজনই নিজেদের আরো জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছেন 'নেটওয়ার্কের বাইরে'  দিয়ে। তাদের দুইজনের অভিনীত অন্যান্য কাজের মধ্যে কষ্টনীড় ও বিলাপ অন্যতম। শ্যামল মাওলা এ বছর অভিনয় করে আলোচিত হয়েছেন কষ্টনীড়, কন্ট্রাক্ট, মহানগর, জোয়ার ভাটার জন্য। পাশাপাশি করেছেন স্ফুলিঙ্গ সিনেমা। এছাড়া অন্যান্য অভিনেতাদের মধ্যে তাহসান (কমলা রঙের রোদ, এন্টি হিরো, শূন্য থেকে শুরু), মুশফিক আর ফারহান (সুইপার ম্যান), ইরফান সাজ্জাদ (এক ভাই চম্পা, যদি আমি না থাকি, ঝিলিক), তৌসিফ মাহবুব (চিরকাল, ভয় করো না, বিফলে মূল্য ফেরত), শাওন (অথবা প্রেমের গল্প, ব্রাদার্স ৩), জুনায়েদ বোকদাদি (নেটওয়ার্কের বাইরে), ইমতিয়াজ বর্ষন (মরনোত্তম), আরশ খান (ভূগোল+), অ্যালেন শুভ্র (জুজু), পার্থ বড়ুয়া (মিস্টার কে), তারিক আনাম খান (আপন), জিয়াউল হক পলাশ (ব্যাচেলর পয়েন্ট, ইউটিউমার) অন্যতম।

সেরা পাঁচ আলোচিত অভিনেত্রী

১. মেহজাবীন: গত কয়েক বছর ধরেই টিভি নাটকে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন এই অভিনেত্রী। এই বছরেও নিজের ধারা বজায় রেখেছেন।  আলাদা করে বলতে হয় 'চিরকাল আজ' নাটকের কথা,প্রচারের পর সবাই তার অভিনয় বন্দনায় মেতে উঠেছিলেন। এছাড়া আলোচিত নাটকের মধ্যে বেস্ট ফ্রেন্ড ৩,পুর্নজন্ম সিরিজ,ভুলজন্ম,যদি কোনোদিন নাটকগুলোতে দেখিয়েছেন অভিনয়ের দক্ষতা। বছরের শুরুতেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল 'শিল্পী' নাটকটি। নিজের লেখা 'আলো' সহ ভাইরাল গার্ল,সিদ্ধান্ত নাটকগুলো কম বেশি আলোচনায় এসেছে। যদিও ওয়েব জগতের এই সুসময়ে নিজেকে এখনো জড়ান নি। 

২. তাসনিয়া ফারিণ: 'লেডিজ এন্ড জেন্টলম্যান' ওয়েব সিরিজে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় ছিল এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারের সেরা অর্জন,অভিনয়টাও দারুণ করেছেন।     জনপ্রিয় ওয়েব ফিল্ম 'নেটওয়ার্কের বাইরে' তে তার প্রানবন্ত উপস্থিতি মুগ্ধতা দিয়েছে। 'কমলা রঙের রোদ,ট্রল কিংবা বেস্ট ফ্রেন্ড ৩ তে স্বল্প উপস্থিতিতেও ছিলেন উজ্জ্বল। এই মুহুর্তে তিনি সেরা তিন টিভি অভিনেত্রীদের একজন,এই বছরে ব্যস্ততাও ছিল চোখে পড়ার মত। তবে নাটক নির্বাচনে এখনই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। অন্যান্য কাজের মধ্যে বিড়াল তপস্যা,তিথির অসুখ,মন দরিয়া,স্বামীর দশটা বদ অভ্যাস অন্যতম। 

বছরজুড়েই আলোচনায় ছিলেন তাসনিয়া ফারিণ

৩. সাবিলা নূর: এই বছরে অভিনেত্রীদের মধ্যে বেশ ভালো উত্থান ঘটেছে তার। বছরের শুরুতেই 'কষ্টনীড়' ওয়েব ফিল্মে অভিনয়ের জন্য সমাদৃত হয়েছেন।  'পাশের বাসার ছেলেটা' নাটকে তার অভিনয়ের জন্য ই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। শর্টফিল্ম 'এমন যদি হতো' ছিল সাহসী কাজ। এছাড়া টিভি নাটকে ছিল প্রচুর ব্যস্ততা,অনেকগুলো কাজের মধ্যে শুক্রবার, অদ-ভূত,রঙিলা ফানুস,রুনু ভাই অন্যতম।

৪. জাকিয়া বারী মম: এই বছরে ওয়েব জগতের কাজ নিয়েই বেশ আলোচনায় ছিলেন৷ শুরুতেই কন্ট্রাক্ট ওয়েব সিরিজে ব্যতিক্রমী অভিনয়ে প্রশংসিত হন। সাড়া ফেলে দেয়া ওয়েব সিরিজ 'মহানগর',বিলাপ ,টিভি নাটকে গরম ভাতের গন্ধ,বদলে যাওয়া মানুষ,ভেলকি,প্রেম নাকি মোহর সুবাদে আলোচিত ছিলেন। স্ফুলিঙ্গ সিনেমাতেও ছিলেন উজ্জ্বল।

৫. তানজিন তিশা: ওয়েবের জন্য একাধিক কাজ করেছিলেন তার একটিও এখনো মুক্তি পায় নি। নারী দিবসের বিশেষ বিজ্ঞাপনে দেখিয়েছেন চমক। টিভি নাটক প্রচার হয়েছে প্রচুর। এর মধ্যে  ছন্দপতন, হ্যালো শুনছেন,তাকে ভালোবাসা বলে,ব্যাঙের ছাতা,শেষটা অন্যরকম ছিল অন্যতম।

সিনেমা ও মাতৃত্বজনিত কারনে অভিনয়  কমিয়ে দিলেও ঊনলৌকিক সিরিজের 'মিসেস প্রহেলিকা'তে মুগ্ধ করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। এছাড়া অহং, রাত গভীর হয় নাটক দুটি আলোচিত হয়েছে। মুখ্য চরিত্রে না হলেও যদি আমি না থাকি, শোকসভা, আপন, ফ্যামিলি ক্রাইসিস নাটকগুলোর জন্য আলোচনায় ছিলেন মনিরা মিঠু। সাবেরী আলম প্রশংসিত হয়েছেন চিরকাল আজ, গরম ভাতের গন্ধ, কষ্টনীড়ের জন্য। অন্যদিকে কষ্টনীড়েই হৃদয় ছোঁয়া অভিনয় দিয়ে দর্শকদের অশ্রুসজল করেছেন রুনা খান।

নাজিফা তুষি আলোচনায় এলেন বেশ কয়েক বছর পর অথবা প্রেমের গল্প, দ্য ডার্ক সাইড অব ঢাকা ও নেটওয়ার্কের বাইরেতে তার গ্ল্যামারস উপস্থিতির মধ্য দিয়ে। তমা মির্জার সফল প্রত্যাবর্তন ঘটেছে দ্য ডার্ক সাইড অব ঢাকা ও খাঁচার ভিতর অচিন পাখির সুবাদে। সাফা কবির আলোচনায় ছিলেন বলি, চরের মাস্টার, চিরকাল, যত্ন কাজগুলোর জন্য। এছাড়া অন্যান্য অভিনেত্রীদের মধ্যে টয়া (একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে, লাবনী), সুনেরাহ (শুন্য থেকে শুরু), তাসনুভা তিশা (নেটওয়ার্কের বাইরে, বকুল ফুল, সীমার), অপর্ণা ঘোষ (চা খাবেন?, যদি আমি না থাকি), নাজিবা বাসার (চা খাবেন?, যোদ্ধা, রঙিলা ফানুশ), অর্ষা(নেটওয়ার্কের বাইরে, মিস্টার কে), শবনম ফারিয়া (বিলাপ, নকশী), চমক (মহানগর, এক ভাই চম্পা), পারসা ইভানা (সুইপার ম্যান, ব্রাদার্স ৩)। এখন তেমন অভিনয়ে না দেখা গেলেও তারিন (অনাত্বীয় দম্পতি,মধুচক্র), ঈশিতা (নট আউট) এর জন্য সমাদৃত হয়েছেন।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা