'আমরা গর্বিত হতে পারি, কারণ আমাদের একজন শাবনূর আছেন' - কনকচাঁপা
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

সঙ্গীত ক্যারিয়ারে কনকচাঁপার গাওয়া অজস্র গান ব্যবহৃত হয়েছে চিত্রনায়িকা শাবনূরের লিপে। সেসব গান এত বেশি জনপ্রিয় হয়েছে, অনেকে তো ভাবেন, সেই গানগুলো আসলে শাবনূরেরই গাওয়া! নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে কনকচাঁপা আজ গল্প করলেন পর্দার বাইরের মানুষ শাবনূরকে নিয়ে, যে শাবনূর ভীষণ আটপৌরে, ভীষণ মিশুক। যে শাবনূরকে ভালো না বেসে পারা যায় না...
শাবনূর আর আমি। দুজনকে বলা যায় দুই দেহ এক উপস্থাপন। আমি শাবনূরের অথবা শাবনূর আমার। প্লেব্যাক এর পুরোটা উজ্জ্বল সময় আমি প্রধানত শাবনূরের জন্য গেয়েছি।
আমি গাইলে নাকি ডিরেক্টরদের মনে হতো তিনি গাইছেন। তাই তার ছবির গানে কনকচাঁপার কণ্ঠ আবশ্যম্ভাবী। অনেকেই এই ঠোঁট মিলে যাওয়া বা আবেগ মিলে যাওয়া অথবা বলা যায় একাত্ম হয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব আমাকে দিতে চান। আমি তা সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করি কারণ আরও নায়িকার লিপে আমি গেয়েছি কিন্তু এমন একাত্ম হওয়া যায়নি হয়তো সেক্ষেত্রে আমি শাবনূরের অত্যাশ্চর্য অভিনয়কেই বেশি মূল্যায়ন করি।তিনি অনেক উঁচুদরের অভিনয় শিল্পী। এসব কথা বা ব্যখ্যা অথবা বাস্তব ঘটনা যারা ছবি দেখতেন, বা ছবির ভক্ত ছিলেন তারা সবাই হয়তো জানেন।
কিন্তু একটি কথা সবার একদম অজানা যেমন পুরো পেশাদার জীবনে শাবনূর আর আমার খুব কম দেখা হয়েছে! প্লেব্যাকের প্রথম দিকে দুজন মিলে একটা টিভি চ্যানেলের জন্য ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। এরপর হঠাৎ হঠাৎ হয়তো চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কোন অনুষ্ঠানে মিতবাক শাবনূরের সাথে আমার খুবই কম সময়ের জন্য দেখা হয়েছে। দুয়েকটা বাক্য বিনিময় ছাড়া আর কিছু হয়নি আমাদের মাঝে।
তো মাশুকের (কণক চাঁপার ছেলে) বিয়ের সময় দাওয়াত দিতে গেলাম তার বাসায়। বাসায় যাওয়ার পরে আবেগে উচ্ছাসে একদম উল্লসিত হয়ে গেলেন। আমার বাসা ওনার বাসার কাছে শুনে বললেন "ও আল্লাহ! তাইলে তো আপনার নিঃশ্বাস ও আমি পাই!"

দুপুর বেলা গড়িয়ে গেলেও তিনি কিছুতেই না খেয়ে আসতে দিলেন না। নিজ হাতে বেড়ে বেড়ে নিজের করা রান্না খাবার আমাদের খাওয়ালেন। আমি বারবার নিরাভরণ মেকআপহীন শাবনূরের চোখের দিকে তাকাচ্ছিলাম। এবং ভীষণ চমকে যাচ্ছিলাম। তার চোখ এতো সুন্দর এতো গভীর এতো চঞ্চল এবং এতো কান্না সেই চোখে যে, বেশীক্ষণ সেই নয়ন পানে তাকানো যায় না! চলাবলায় এতো ভোলাভালা যে আমি বারবার আনমনা হয়ে ভাবছিলাম, এই মানুষ এতো নিখুঁত অভিনয় কিভাবে করেন! কিভাবে পারেন!
যাই হোক, যথারীতি তিনি বিয়েতে এলেন, মজা করে খাবার খেলেন, ভক্তদের সবার সাথে হেসে হেসে ধৈর্য্য ধরে এতো ছবি তুললেন যে আমরা সবাই বিস্মিত হয়ে গেলাম।
সত্যিই আমরা গর্বিত হতে পারি যে আমাদের একজন শাবনূর আছেন, যার নামের আগে-পিছে কোন বিশেষন লাগে না।
লেখাটি সঙ্গীতশিল্পী কনকচাঁপার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে সংগৃহীত।