মানি হাইস্ট এর হিন্দি ভার্সন: 'প্রফেসর' হিসেবে কতটা মানানসই হবেন অর্জুন রামপাল?
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
ব্যক্তিগত মতামত, খোদ 'মানি হাইস্ট' এর শেষের দুই কিস্তি খুব একটা আশানুরূপ হয় নি, একই গল্পের চর্বিত-চর্বণ হয়েছে বারবার, প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মেলবিন্দু মুখ থুবড়ে পড়েছে ক্রমাগতই । সে হিসেবে তাই প্রশ্ন থেকেই যায়, এরকম এক প্রশ্নবিদ্ধ নির্মাণের রূপান্তর হিসেবে হিন্দি 'মানি হাইস্ট' ঠিক কতটা চমক দেখাবে, কতটা জয় করবে হৃদয়?
সাম্প্রতিক সময়ে গ্লোবালি যে কয়টি টিভি সিরিজ নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাতামাতি হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে 'স্কুইড গেম' এর পরে 'লা কাসা দে পাপেল'ই সম্ভবত দ্বিতীয় স্থানে আছে। এই এক টিভি সিরিজ দিয়ে যত আলোচনা, সমালোচনা, কড়চা... ইদানিংকালে খুব কম টিভি সিরিজ নিয়ে এত কথাবার্তা হয়েছে। বিষয়টা অনেকটা এরকম- দর্শক হয় মানি হাইস্ট কে পছন্দ করবে, অথবা পছন্দ করবে না। কিন্তু কেউ মানি হাইস্ট কে উপেক্ষা করবে, সেটি মোটেও হবে না।
এই 'লা কাসা দে পাপেল'কে অনুপ্রেরণা মেনে সারা বিশ্বেই কমবেশি নির্মাণ হয়েছে, হচ্ছে। একই রেশ ধরে 'মানি হাইস্ট' এর অনুকরণে ভারতেও এক টিভি সিরিজ হচ্ছে। যদিও এটি পুরোনো খবর। অর্জুন রামপাল সে টিভি সিরিজের 'প্রফেসর' চরিত্রে অভিনয় করছেন, এটিও জানা অনেকের। তবে কতটা ঠিকঠাকভাবে তিনি ফুটিয়ে তুলতে পারবেন বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় 'প্রফেসর' চরিত্রটিকে, সেটি জানা নেই কারোরই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্প্যানিশ অভিনেতা আলভারো মোর্তে এই এক 'প্রফেসর' চরিত্রে যে অপার্থিব অভিনয় করেছেন, তা অভাবনীয়। বলতে গেলে এই এক চরিত্র দিয়েই তিনি 'গ্লোবাল স্টার' এর রিকগনিশন পেয়েছিলেন!
সে সমীকরণ বিবেচনায় এটা বলাই যায়, অর্জুন রামপালের জন্যে এই চরিত্র করা রীতিমতো বড়সড় এক চাপ! 'প্রফেসর' চরিত্রে তার অভিনয় নিয়ে আতশি কাচের নীচে যে বিস্তর পর্যবেক্ষণ হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না মোটেও। পাশাপাশি আলভারো মোর্তের সেই অতিমানবীয় অভিনয়ের তুলনায় তিনি কতটুকু কী করতে পারবেন, সেই প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির তুলনাও হবে বিস্তর। এরকম মহীরূহসম দায়বদ্ধতা সামলে তিনি কতটুকু অনবদ্য অভিনয় করতে পারবেন, সেটিই হয়তো দিনশেষে হয়ে থাকবে অভিনয়-শৈলীর উৎকর্ষ অথবা অপকর্ষের মূল নিয়ামক।
এই নির্মাণের নির্মাতা হিসেবে জনপ্রিয় নির্মাতা জুটি আব্বাস-মাস্তান থাকবেন ফ্রন্টলাইনে। তবে এই সংবাদে ঠিক স্বস্তি পাওয়ারও কোনো কারন নেই। খিলাড়ি, বাজিগর, বাদশাহ, রেস, প্লেয়ারস এর মতন তুমুল জনপ্রিয় সিনেমা এসেছে যাদের হাত ধরে, তাদের সাম্প্রতিক কাজগুলো যে ঠিক ততটা আশাব্যঞ্জক না, তা সচেতন দর্শকমাত্রই অবগত। ঠিক সে কারণেই তারা কী করবেন অথবা না, তা নিয়ে খানিকটা অস্বস্তি এবং অসন্তুষ্টির বাতাবরণও বহাল তবিয়তে উপস্থিত।
এ নির্মাণের সুবাদে এই নির্মাতা জুটি তাদের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারেন কী না, সেদিকে যেমন আলাদা এক নজর থাকবে, তেমনি 'মানি হাইস্ট' থেকে তারা কতটুকু নিলেন আর কতটুকু বাদ দিলেন, কতটুকু কী রাখলেন স্বকীয়, সেদিকেও থাকবে কৌতূহল। ইন্টারন্যাশনাল স্টোরির অ্যাডাপ্টেশনে এই নির্মাতারা যে দারুণ পটু, তা সাধারণ দর্শকমাত্রই জানেন। 'মানি হাইস্ট' এর অ্যাডাপ্টেশন তারা কতটা সিদ্ধহস্তে করেন, চমৎকারিত্বের সেটিও হতে পারে প্রভাবক। যদিও তাদের দাবী, নির্মাণে পুরোপুরি অনুসরণ করা হবে না 'মানি হাইস্ট'কে, খানিকটা নতুনত্ব আনা হবে চরিত্রের বিন্যাসেও। গল্পের শেষেও থাকবে খানিকটা ভিন্ন স্বাদের চমক। তবে কতটুকু কী সত্যি, তা জানা যাবে নির্মাণেই।
ব্যক্তিগত মতামত, খোদ 'মানি হাইস্ট' এর শেষের দুই কিস্তি খুব একটা আশানুরূপ হয় নি, একই গল্পের চর্বিত-চর্বণ হয়েছে বারবার, প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মেলবিন্দু মুখ থুবড়ে পড়েছে ক্রমাগতই । সে হিসেবে তাই প্রশ্ন থেকেই যায়, এরকম এক প্রশ্নবিদ্ধ নির্মাণের রূপান্তর হিসেবে হিন্দি 'মানি হাইস্ট' ঠিক কতটা চমক দেখাবে, কতটা জয় করবে হৃদয়? প্রশ্নের উত্তর মিলবে আগামী বছর। আব্বাস-মাস্তান এবং অর্জুন রামপাল জুটিতে সওয়ার হয়ে ভারতীয় 'মানি হাইস্ট', স্প্যানিশ 'মানি হাইস্ট'কে টপকে যেতে পারে কী পারে না, তা জানার জন্যে আপাতত তাই অপেক্ষাই একমাত্র পন্থা। দেখা যাক কী হয়...