২০২০ এর অনেকটা সময় জুড়েই ভারত, বাংলাদেশে লকডাউন ছিলো। স্বাভাবিক ভাবেই, সিনেমা-সিরিজের শুটিং এ তার প্রভাব পড়েছে। ফলশ্রুতিতে এ বছরে সিনেমা মুক্তির পরিসংখ্যানে মন্দা নেমে আসে কী না, শঙ্কা ছিলো তা নিয়েই...

যদি বিগত কয়েক বছরে উপমহাদেশের সিনেমা ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য করা হয়, বেশ অদ্ভুত এক পরিবর্তন লক্ষ্য করবো সবাই। ক্রমশ লাইনআপে ভালো সিনেমার পরিমাণ বেড়েছে। স্ট্রিমিং সাইট বেড়েছে। সিরিজ, ডকুমেন্ট্রির সংখ্যা বেড়েছে। বস্তাপঁচা আবর্জনা সিনেমা কমেছে। সিনেমায় মেধার সংমিশ্রণ বেড়েছে ঈর্ষণীয় পরিমাণে। শিল্পসংস্কৃতির যখন এরকম রমরমা অবস্থা শুরু হয়েছে, ঠিক তখনই গত বছর শুরু হলো করোনাভাইরাসের তান্ডব। বেশ ভয়ই পাচ্ছিলাম। ২০২০ এর অনেকটা সময় জুড়েই ভারত, বাংলাদেশে লকডাউন ছিলো। স্বাভাবিক ভাবেই, সিনেমা-সিরিজের শুটিং এ তার প্রভাব পড়েছে। ফলশ্রুতিতে এ বছরে সিনেমা মুক্তির পরিসংখ্যানে মন্দা নেমে আসে কী না,শঙ্কা ছিলো তা নিয়েই। 

কিন্তু বছর শুরু হওয়ার পর থেকেই একের পর এক দুর্দান্ত সিনেমার খবর পাচ্ছি। মালয়লাম, তামিল, কেরালার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছে, কে কার চেয়ে ভালো সিনেমা নিয়ে আসবে, তা নিয়ে। পোয়াবারো হয়েছে দর্শকদেরই। একের পর এক দুর্দান্ত কাজ দেখার সৌভাগ্য হচ্ছে তাদেরও। 

এ বছরেরও ছয় মাস চলে গিয়েছে। এরকম এক মাহেন্দ্রক্ষণে মনে হলো, গত ছয় মাসের উল্লেখযোগ্য কিছু সিনেমার আদ্যোপান্ত সন্ধান নিয়ে কিছু কড়চা করা যাক। ফিল্ম কম্প্যানিয়নের অনুপমা চোপড়ার বানানো দশটি সিনেমার তালিকাটাই বেছে নিলাম এজন্যে।  মজার ব্যাপার হচ্ছে, অনুুুপমার এই তালিকায় দশটি ভারতীয় সিনেমা থাকলেও, এরমধ্যে বলিউডি সিনেমা নেই একটিও। হিন্দি সিনেমার মান কোথায় গিয়ে নেমেছে, কিংবা ভারতের রিজিওনাল ইন্ডাস্ট্রিগুলো কিভাবে উঠে আসছে দ্রুত- তারই একটা প্রমাণ যেন এই তালিকাট! 

1. The Great Indian Kitchen 

এই সিনেমার ইন্টারেস্টিং এক ট্রিভিয়া দিয়ে শুরু করি লেখা। সিনেমাটি মুক্তির পর প্রায় প্রত্যেকটি জায়ান্ট স্ট্রিমিং সাইট রিফিউজ করেছিলো এই সিনেমাটিকে৷ পরে অখ্যাত এক স্ট্রিমিং সাইটে মুক্তি পায় 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেন।'  মুক্তির পরে যখন সিনেমাটি দেশবিদেশের অ্যাওয়ার্ড পাওয়া শুরু করে,  তখন টনক নড়ে সবার। এরপর তড়িঘড়ি অ্যামাজন প্রাইম কিনে নেয় সিনেমটির স্বত্ব! 

দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেন! 

পুরুষতান্ত্রিক পরিবারে নারীর অবস্থান আসলে যে কতটা নিম্ন প্রকোষ্ঠে, সেটারই এক হালফিল উদাহরণ 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কিচেন।' খুব সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ডিটেইলস এবং মৃদুচালের ন্যারেশন স্টাইলে এক দম্পতির জীবনযাপনের আড়ালে তুলে আনা হয়েছে উপমহাদেশের অর্থোডক্স লিঙ্গবৈষম্যকে। এই অপসংস্কৃতির বীজ কত গভীরে প্রোথিত, দেখানো হয়েছে তাও। 

2. The Disciple

Once you're on the stage, everything is a performance 

মঞ্চে পারফর্ম করা হয়তো জাঁকালো এক অভিজ্ঞতা। কিন্তু সাধারণ এক মানুষ থেকে মঞ্চের মানু্ষ হওয়ার যে যাত্রা, সেটা দীর্ঘ, ক্লান্তিকর, জৌলুশহীন এক যাত্রা। এ যাত্রায় যারাই শেষতক লড়াই করে, তারাই শেষপর্যন্ত মঞ্চে ওঠার সেই ছোট্ট কাঠের সিঁড়িটুকুর সন্ধান পায়।

দ্য ডিসাইপল 

এই সিনেমায় সেটাই দেখানো হয়েছে। শরদ নামের এক ক্লাসিক্যাল ভোকাল আর্টিস্ট এর গল্প এটি। যিনি স্বপ্ন দেখতে ভয় পান , নিজেকে নিয়ে যিনি ক্রমশই অস্তিত্বের সংকটে ভোগেন। যিনি মনে করেন, তাকে দিয়ে কিছুই হবে না কোনোদিন। এই মানুষটি গুটিয়ে যেতে যেতেও থামেন না। ত্যাগ ও যন্ত্রণার এক বিষাদময় যাত্রাপথের মধ্যে দিয়ে হেঁটে হেঁটে এগোতে থাকেন সামনে। এই যে অগোচরে থাকা এক যাত্রাপথের গল্প, সেটাই 'দ্য ডিসাইপল।' 'ফিল গুড' মুভি যারা হন্যে হয়ে খুঁজছেন, তাদের জন্যে এই মুভি রেকোমেন্ডেড!  

3. Joji

শেক্সপিয়ারের 'ম্যাকবেথ' থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত 'জোজি' সিনেমা মুগ্ধ করেছে নানাদিক থেকে। শেক্সপিয়ারিয়ান ট্রাজেডি নিয়ে যদি কারো জানাশোনা থেকে থাকে এবং 'ম্যাকবেথ' যদি কেউ দেখে থাকেনও, তবু এই সিনেমা দেখতে হবে। ম্যাকবেথের 'মালয়লাম অ্যাডাপ্টেশন' এতটাই চমৎকার হয়েছে, সে সাথে ফাহাদ ফাসিলের দুর্দান্ত অভিনয় আর টানটান স্ক্রিনপ্লে... এই কম্বো মনে থাকবে অনেকদিন। 

জোজি

​​​​​গল্পে "জোজি' বেশ বিত্তশালী এক ব্যক্তির বখে যাওয়া সন্তান। বাবা মারা যাওয়ার পরে এই জোজি এবং তার ভাইয়েরা মিলে বাবার সম্পত্তির উপরে হামলে পড়ে ক্ষুধার্ত পশুর মতন। খুব ছোট্ট একটা ঘটনা থেকে পরিস্থিতি গড়ায় অনেকদূর। মারামারি, রক্তপাত, খুন, জখম...ক্রমশই ডার্ক শেডে ঢুকতে শুরু করে সিনেমার স্রোত। ট্রাজেডি, ডার্ক কমেডি এবং থ্রিলের দুর্দান্ত কম্বিনেশনের এক দুর্দান্ত নির্মাণ হয়ে দাঁড়ায় 'জোজি।' 

4. Kala 

Man is Not What He Thinks He Is, He is What He Hides 

এই সিনেমা নিয়ে যদিও মানুষের মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে, তবে এ বছরের 'সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার' জনরায় এই সিনেমাকে রাখতে হবে উপরের দিকেই। 'কালা' সিনেমা আবর্তিত হয় 'সাজি' নামের এক ছেলেকে ঘিরে, যে নিজের বিচিত্র-বিভিন্ন সত্তার উপর্যুপরি অত্যাচারে ক্রমশই বিপর্যস্ত হতে থাকে। তার এই বৈপরীত্যে ভরা ব্যবহারে সে নাকাল করতে থাকে আশেপাশের মানুষজনকেও। নিজেকে থামানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও নিয়মিত ব্যর্থ হয় সে। শেষপর্যন্ত গিয়ে পরিস্থিতি ক্রমশ চলে যায় নাগালেরই বাইরে। 

কালা

টভিনো থমাস দারুণ অভিনয় করেছেন এখানে। ধন্যবাদ পাবেন সিনেমার পরিচালক রোহিত ভি.এস'ও। প্রত্যেকটা সীনের মধ্যেই কিছু না কিছু ইন্টারেস্টিং বিষয় তিনি রেখেছিলেন। সে সাথে মেটাফোরিক্যাল কনসেপ্টও ছিলো বেশ। যারা 'Jallikattu' সিনেমা দেখেছেন, তাদের জন্যে এ সিনেমা হাইলি রেকোমেন্ডেড। 

5. Drishyam 02 

'দৃশ্যম-০২' নিয়ে গত ক'দিনে এত কথাবার্তা হয়েছে, এখন যাই বলা হোক না কেন, চর্বিতচর্বণ হবে। আট বছর আগে মুক্তি পাওয়া 'দৃশ্যম' ছিলো মাস্টারপিস। 'দৃশ্যম-০২' এর শুরুটা স্লো-পেসড হলেও শেষে গিয়ে জমিয়ে দিলো এই সিনেমাও।

দৃশ্যম ০২

জর্জকুট্টি নামের এক ভদ্রলোক পরিবারসহ ফেঁসে যান এক খুনের চক্করে। সেই খুনের অভিযোগ থেকে বাঁচতে তারা নেয় অভিনব এক পন্থা। 'দৃশ্যম' এ এটুকুই ছিলো গল্প। 'দৃশ্যম-০২' তে এসে জর্জকুট্টি নিজের পরিবারকে বাঁচানোর মিশন নিয়ে যান অন্য আরেক লেভেলে। মোহনলালের অভিনয়, জিতু জোসেফের স্ক্রিপ্ট... সবমিলিয়ে দুর্দান্ত। শোনা যাচ্ছে, তৃতীয় পর্বও আসবে এ সিনেমার। কী যে হবে সেখানে, চিন্তা করতেও বেগ পেতে হচ্ছে। 

6. karnan

জোর যার মুল্লুক তার...এই প্রবাদ বোধকরি আমাদের সবারই শোনা। সেই প্রবাদেরই এক ভিজ্যুয়াল রিপ্রেজেন্টেশন 'কার্নান।' অহিংসা আর নীতিবাক্য দিয়ে যে সবসময়ে অধিকার আদায় হয় না, মাঝেমধ্যে আক্রমন করেই যে বুঝে পেতে হয় দাবিদাওয়া, সেটাই দেখি এই সিনেমাতে।

কারনান

গ্রামের অত্যাচারিত মানুষদের পক্ষে দাঁড়িয়ে লড়াই করে যাওয়া 'কার্নান' চরিত্রে ছিলো ধানুশ। দুর্দান্ত অভিনয় তাঁর। বাকিরাও অনবদ্য। গল্প টিপিক্যাল মনে হতে পারে। কিন্তু স্টোরিটেলিং অনেকটাই অন্যরকম। সাথে সিনেম্যাটোগ্রাফী আর দারুণ ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর...মাস্টওয়াচ! 

7. Jathi Ratnalu

মহামারীর এই সময়টা এমনিতেই থমথমে। এই সময়ে যদি আপনি হালকা ধাঁচের একটা সিনেমা দেখতে চান, তাহলে এই 'কমেডি' জনরার সিনেমা আপনারই জন্যে। 

সিনেমার গল্প আবর্তিত হয় তিন কয়েদ খাটা আসামীকে নিয়ে। যারা কারাগার থেকে বেরিয়ে ভাবে, জীবনটা আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। কিন্তু চাইলেই কি আর সম্ভব হয় সব? তাই নতুন জীবনের শুরুর পথে পদে পদে পেতে থাকা তারা বিপত্তি। এভাবেই ক্রমে ক্রমে গল্প এগোয় সামনে। 

জাতি রাতনালু

সিনেমার প্লট আহামরি না। তবে কমেডি সিকোয়েন্স এবং হিউমার গুলো ছিলো দারুণ। আড়াই ঘন্টার এই সিনেমা গোমড়ামুখে কাউকেও হাসাতে পারবে, এ কথা হলফ করে বলাই যায়। 

8. Geeli pucchi

গিলি পুচ্চি। ভেজা চুম্বন৷ 'আজিব দাস্তানস' সিনেমার চার গল্পের মধ্যে এটি ছিলো একটি। অবাক হয়েছি, গল্পের শর্ট ডিউরেশনের মধ্যেও অনেক কিছুকে এঙ্গেজ করেছেন পরিচালক৷ এবং প্রত্যেকটি জিনিসই এসেছে বেশ ছিমছামভাবে৷ জাতপাত, সমকামিতা, মাতৃত্ব, পারিবারিক সংস্কার বলয়... ডেঞ্জারাস সব থিম একসাথে এসে দারুণ এক মাল্টি-লেয়ারড গল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে শেষে।

গিলি পুচ্চি

এই গল্পে একাই বাজিমাত করেছেন কঙ্কনা সেনশর্মা৷ দলিত সমাজ থেকে উঠে আসা এক শ্রমিক তিনি। বোল্ড, ওয়াইল্ড, অ্যাগ্রেসিভ এক চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় তার! অদিতি রাও হায়দারিও চেষ্টা করেছেন কঙ্কনার সাথে তাল মেলাবার। খুব একটা তাল না মিললেও সমস্যা হয়নি। কঙ্কনা একাই দারুণভাবে টেনে নিয়েছেন পুরোটা। অবশ্যই দেখা উচিত এই অসাধারণ নির্মাণ। 

9. Nayattu

শিকারী যখন নিজেই শিকার হয়ে যান, তখন বিষয়টা কেমন যেন উল্টেপাল্টে যায়। যেমনটা হয় এই সিনেমার সময়েও। তিন পুলিশ, তারা ঘটনাচক্রে এক মার্ডার কেসে  ফেঁসে যান। এমন এক মানুষের মৃত্যুর পেছনে দায়ী করা হয় তাদের, যে মানুষটি লোকাল মাইনোরিটি কমিউনিটির মানুষ। যার মৃত্যুতে ক্রমশই জলঘোলা হচ্ছে সবখানে। 

নায়াট্টু

এই তিন পুলিশ বাঁচার জন্যে পালাতে থাকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। সময়ের বিভিন্ন চলকে চলতে থাকে তাদের চোর-পুলিশ খেলা। কিন্তু শেষরক্ষা শেষপর্যন্ত হয় কী না, সেটাই জানা যাবে সিনেমার শেষে। 

এত সুন্দর গল্প, সাথে ব্রিলিয়ান্ট সিনেম্যাটোগ্রাফী আর ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর...মুগ্ধ হয়েছি৷ সাথে প্রোটাগনিস্টদের সহজ-স্বাভাবিক অভিনয় তো রইলোই। এই সিনেমার একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত এক সাসপেন্সে আটকে থাকতে বাধ্য হবে যে কেউ। দারুণ। 

10. Mandela 

খুব নগন্য কোনো মানুষও যদি হুট করে প্রভাবশালী কেউ হয়ে যায়, তাহলে কেমন দাঁড়ায় বিষয়টি? এরকমই এক থিমের উপর দাঁড়িয়ে নির্মিত 'ম্যান্ডেলা' সিনেমাটি। গ্রামের এক অখ্যাত সেলুনওয়ালা হুট করে ইলেকশনের সময়ে হয়ে যায় জনপ্রিয়। না, সে ইলেকশনে দাঁড়ায়নি বা জেতেওনি। বরং ইলেকশনে দুই প্রার্থীর মধ্যে ড্র হওয়ার পরে, ডিসাইডিং ভোটের মওকা চলে আসে তার হাতে। কী করবে সে? যাকে ভোট দেবে, সেই বসবে মসনদে। কিভাবে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করবে সে?

ম্যান্ডেলা 

সিচুয়েশনাল ডার্ক কমেডি, সাথে পলিটিক্যাল স্যাটায়ার ও কাস্টিজম এর কম্বিনেশন, এবং সাথে অবশ্যই যোগী বাবুর দুর্দান্ত অভিনয়...সবমিলিয়ে গভীর বোধোদয় এবং নির্মল বিনোদনের মিশেলের এক নির্মাণই 'ম্যান্ডেলা। রেকোমেন্ডেড। 

বছরের প্রথম ছয় মাসেই যদি এরকম দুর্দান্ত সব সিনেমা পেতে থাকে সবাই, বছরের শেষপর্যন্ত গিয়ে আর কী কী অপেক্ষা করছে দর্শকদের জন্যে, সেটা নিয়ে চাইলে চুলচেরা গবেষণা করাই যায়৷ সবাই নিস্ফলা ভেবেছিলো যে বছরকে, সে বছরই যে এত অসাধারণ সব কাজ উপহার দেবে, তা তো ছিলো ভাবনারও অতীত। এবং সেটাই এখন বাস্তব। এভাবেই সিনেমাপ্রেমীদের ভুল প্রমাণ করে ভালো কাজ আসুক। নিয়মিত আসুক। সেটাই প্রত্যাশা। 

তথ্যসূত্র কৃতজ্ঞতা- ফিল্ম কম্প্যানিয়ন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা