যদিও একই বিষয়ের বারবার পুনরাবৃত্তিতে দর্শকেরা প্রায় সবাই-ই 'লা কাসা দে পাপেল' নিয়ে তিতিবিরক্ত, তবুও ভেতরে ভেতরে সবারই প্রত্যাশা, শেষটা যাতে শেষের মতই হয়। এবং নির্মাতাসহ গোটা টীমেরও এটাই শেষ সুযোগ- 'লা কাসা দে পাপেল' এর সেই বিগত রোলারকোস্টার থ্রিল, সাসপেন্স, হৃত গৌরব ফেরত আনার। ফেয়ারওয়েল যেহেতু, সেটা যাতে মনে রাখার মতোনই হয়, এটাই সবার একমাত্র আশা...
'লা কাসা দে পাপেল' এর 'সিজন ফিনালে' মুক্তির আগেই শো ক্রিয়েটর অ্যালেক্স পিনা জানিয়েছিলেন, এবারের সিজন মুক্তি পাবে দুই খণ্ডে। প্রথম খণ্ডের পুরোটা জুড়ে ফুল প্যাকড অ্যাকশন। আর দ্বিতীয় খণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে ক্যারেক্টারদের ইমোশনাল জার্নি। সেপ্টেম্বরের তিন তারিখে মুক্তি পাওয়া 'লা কাসা দে পাপেল' এর প্রথম খণ্ডে অ্যালেক্স পিনার সে কথারই সত্যতা খুঁজে পাওয়া গেলো। 'ব্যাঙ্ক অব স্পেন' এ আটকে থাকা ডাকাতেরা সম্মুখ সমরে নামলেন। প্রতিপক্ষ হিসেবে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি এলো কিছু খুনে যোদ্ধাও। যুদ্ধের প্রাথমিক কিস্তিতে লড়াই সমানে সমানে হলেও শেষভাগে এসে ডাকাতদলের অন্যতম প্রধান মুখ 'টোকিও' নিহত হয়ে গল্পে খানিকটা অপ্রত্যাশিত মোচড় আনলো। 'টোকিও'র এই পরিণতি খানিকটা অপ্রত্যাশিত হলেও এটা ধারণাই ছিলো সবার, বড়সড় কোনো চমক রাখা হবে প্রথম খণ্ডে। তাছাড়া পুরো যাত্রাই তো পাততাড়ি গোটাচ্ছে ক্রমশ, সেখানে অন্যতম মূখ্যচরিত্র নাহয় একটু আগেই বিদায় নিলো। তা নিয়ে খুব বেশি খচখচানিরও তো কিছু নেই তেমন!
অ্যালেক্স পিনার কথানুযায়ী, সিজন ফিনালে'র দ্বিতীয় কিস্তি যেভাবে সাজানো হয়েছে, সেখানে আশা করা যায়- গোলাবারুদের ধাতব গর্জন খানিকটা স্তিমিত হবে এবার। রক্ত-বুলেট-মৃত্যুকে হটিয়ে সামনে আসবে মানবিক কিছু গল্প। অর্থের পেছনে অনর্থক এ ছোটাছুটিতে যত রক্তপাত, প্রাণহানি হলো, তার হিসেব-নিকেশও হয়তো হবে খানিকটা। সে প্রস্তুতিরই অংশ হিসেবে দ্বিতীয় খণ্ডের টিজার মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। যেখানে টোকিও'র প্রয়াণজনিত শোক যেমন আছে, তেমনি আছে শোককে শক্তিতে পরিণত করার বার্তাও। বেয়াল্লিশ সেকেন্ডের এ ট্রেলারে যেমন প্রফেসর জানালেন-
শেষ কয়েক ঘন্টায় আমি অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছি। এই ডাকাতির জন্যে আমি আর কোনো কাছের মানুষ হারাতে চাই না।
সুতরাং রঙ্গমঞ্চে এবার প্রফেসর যে হাজির হবেন, তা একরকম নিশ্চিত। এবং মগজাস্ত্রের পাশাপাশি এবার তার হাতে যে আগ্নেয়াস্ত্রও থাকবে, টিজারে সেটির উল্লেখও বেশ ভালোভাবেই আছে।
তবে যতই বলা হোক, সিজন ফিনালের এবারের পর্বে ইমোশনাল জার্নিই দেখানো হবে পুরোভাগে, এ মন্তব্য আসলে খুব বেশি প্রাসঙ্গিক বলেও মনে হচ্ছে না। এবারের পর্বেও অ্যাকশন যে বেশ ভালোভাবে থাকবে, তার খানিকটা আঁচ টিজারেই পাওয়া গিয়েছে। তাছাড়া কিছুদিন আগে 'লা কাসা দে পাপেল' এর একটা ডিলেটেড/লিকড হয়ে যাওয়া সিন অন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়েছিলো, যেখানে দেখা যায়- পুলিশ অফিসার অ্যালিসিয়া সিয়েরা গাড়ি নিয়ে পালাচ্ছেন এবং মার্সেলা এবং প্রফেসর তাকে থামাতে গলদঘর্ম হচ্ছেন। বোঝাই যাচ্ছে, সিজন ফিনালের সর্বশেষ খণ্ডে অ্যালিসিয়ার ভূমিকাও নেহায়েত কম হবে না। যেহেতু প্রথম খণ্ডে অ্যালিসিয়াকে একরকম 'ঠুঁটো জগন্নাথ' করেই রাখা হয়েছিলো, এবারের খণ্ডে তাই এ চরিত্রেরও প্রমাণ করার আছে বহুকিছু। পাশাপাশি 'ব্যাঙ্ক অব স্পেন' এর মধ্যে ঢুকে পড়া সেই খুনে যোদ্ধারা তো রইলোই। সবমিলিয়ে তাই যুদ্ধের ভিন্ন পক্ষেরা সবাই-ই প্রস্তুত। বিস্ফোরণের জন্যে। ধ্বংসযজ্ঞের জন্যে।
যদিও একই বিষয়ের বারবার পুনরাবৃত্তিতে দর্শকেরা প্রায় সবাই-ই 'লা কাসা দে পাপেল' এর প্রতি তিতিবিরক্ত, তবুও ভেতরে ভেতরে সবারই প্রত্যাশা, শেষটা যাতে শেষের মতই হয়। এবং নির্মাতাসহ গোটা টীমেরও এটাই শেষ সুযোগ- 'লা কাসা দে পাপেল' এর সেই বিগত রোলারকোস্টার থ্রিল, সাসপেন্স, হৃত গৌরব ফেরত আনার। ফেয়ারওয়েল যেহেতু, সেটা যাতে মনে রাখার মতনই হয়, এ নিয়েই সবার আশা, প্রত্যাশা, হাপিত্যেশ। এবং এসব মিলিয়েমিশিয়েই প্রত্যাশার পারদ ক্রমাগত আকাশচুম্বী। প্রাপ্তির সাথে তার সাক্ষাৎ হয় কী না, এখন সেটারই হিসেবনিকেশ।