'কোটা ফ্যাক্টরি- সিজন টু' নিয়ে অজস্র সব প্রশ্ন। টিজারেও বুদ্বুদের ফেনার মতন আনা হলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নকে। চরিত্রগুলোর পরিণতি আর টিপিক্যাল শিক্ষাব্যবস্থার সার্থক পোর্ট্রেয়াল দেখাতে গেলে, এবারের নির্মাণকে যে ছাপিয়ে যেতে হবে গত কিস্তিকেও, তা বলাই বাহুল্য...

দ্য ভাইরাল ফিভার (টিভিএফ) এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ নির্মাণের তালিকা করতে বসলে অবধারিতভাবে সেখানে 'কোটা ফ্যাক্টরি'র নাম আসবে প্রথমদিকে। দুর্দান্ত এক সামাজিক অনুষঙ্গ আর সে অনুষঙ্গের যেরকম দুর্দান্ত রূপান্তর আমরা দেখি এ ওয়েব সিরিজে, তা রীতিমতো বিস্ময়ের৷ মুগ্ধতার। তবে 'কোটা ফ্যাক্টরি'র প্রথম সিজনের শেষটা নিয়ে খানিকটা আপত্তি ছিলো অনেকের। যেভাবে শেষ হয়েছে, খানিকটা অতৃপ্তিই যেন সঙ্গী হয় দর্শকদের।

এরপর কেটেছে অনেকদিন, 'কোটা ফ্যাক্টরি' নিয়ে আলোচনাও ক্রমশ স্তিমিত হয়েছে। 'কোটা ফ্যাক্টরি'র ভক্তকুলও নিয়মিত বিরতিতে ব্যস্ত হয়েছে যাপিত নানা সংকটে। এই ওয়েব সিরিজের নতুন কোনো সিজন আসবে কী না, তা নিয়েও কেউ কোনো সদুত্তর দেয়নি বহুদিন। এরপর যেদিন টিভিএফ জানালো, স্ট্রিমিং সাইট 'নেটফ্লিক্স' থেকে বের হবে 'কোটা ফ্যাক্টরি'র দ্বিতীয় কিস্তি, এক ধাক্কায় সবাই চলে এলো সে জায়গাটিতে, যেখানে ইতি টানা হয়েছিলো প্রথম সিজনের।

বহু জল্পনা-কল্পনা, আকাশকুসুম হিসেব-নিকেশ হচ্ছে সিরিজটিকে নিয়ে। প্রোডিজি-স্টার জিতু ভাইয়ার কী অবস্থা এখন? ভার্তিকা, মিনা, উদয় আর প্রডিজির চেনা পরিবেশ ছেড়ে মহেশ্বরীতে এলো যে বৈভব, তার কী অবস্থা এখন? 'কোটা' নামের সেই বিষণ্ণ শহরও বা কেমন আছে, একঝাঁক ব্যস্ত প্রাণকে সঙ্গে নিয়ে? যে স্বপ্নের পেছনে ছুটছে সবাই, সে স্বপ্ন কতটুকু দিচ্ছে ধরা? কতটুকুই বা অধরা? 

অজস্র প্রশ্ন। উত্তর মিলছিলো না কোনোকিছুরই। তবে নেটফ্লিক্স থেকে মুক্তি পাওয়া আজকের টিজারে কিছু প্রশ্নের খানিকটা উত্তর যেন পাওয়া গেলো। জিতু ভাইয়া আর প্রডিজি কোচিং সেন্টারে থাকবেন না, নিজের নতুন কোচিং সেন্টার খুলবেন, তা নানা সংবাদ, চাপান-উতোরের বরাতে অনেকটাই নিশ্চিত ছিলো। টিজারেও সেটিই প্রকাশ পেল। টিজারের একেবারে শুরুতেই জানা হয়ে গেলো, প্রডিজির সাথে সম্পর্ক চুকেছে জিতু ভাইয়ার। তবে জিতু ভাইয়ার এখন কী অবস্থা, কোথায় আছেন তিনি, তার পছন্দের ছেলেমেয়েরা আবারও চলে এসেছে কী না তার কাছে, সেসব খোলাসা হয় নি, তা জানা যাবে সিরিজ মুক্তির পরেই। 

বিষণ্ণ, ফ্যাকাশে কোটা! 

চরিত্রগুলোর গল্প তো রইলোই, টিজারে খানিকটা দেখানোও হলো চরিত্রগুলোর রূপান্তর। তবে এসবের পাশাপাশি এই টিজারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নও ছুঁড়ে দেয়া হলো। যে আইআইটি অর্থাৎ 'ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি'তে সুযোগ পাওয়ার জন্যে জীবন-মরণ সবকিছুর সাথে আপোষ করে ফেলছে এই ছেলেমেয়েরা, সেই আইআইটিতে এমন কী আলাদা আছে, যার জন্যে এত ত্যাগ স্বীকার করতে হবে? যার জন্যে জীবনকে যান্ত্রিক বানিয়ে ফেলতে হবে? প্রশ্নগুলো আপাতদৃষ্টিতে নিষ্পাপ মনে হলেও, এসব প্রশ্নের ব্যাপ্তি আসলে কতটা, তা সবারই বুঝতে পারার কথা। 

এবারের সিজনে যে এরকম থট প্রভোকিং প্রশ্নগুলোর উত্তর অনুসন্ধানের চেষ্টা চলবে, 'কোটা ফ্যাক্টরি'র নির্মাতা রাঘব সুব্বু নিজেও স্বীকার করেছেন তা। প্রতি বছরে যে ছেলেমেয়েরা 'কোটা'য় আসে, তারা কী নিজেদের তাগিদে আসে, নাকি, নিজেদের বাবা-মা'র ইচ্ছের বলি হয়ে আসে, এক বড়সড় প্রশ্ন সেখানও। সে প্রশ্নের উত্তরও হয়তো পাওয়া যাবে এবারের পর্বে।

'কোটা ফ্যাক্টরি'র প্রোটাগনিস্ট বৈভব! 

টিজারে দেখা মিললো, অসমাপ্ত প্রেমের কুশীলব বৈভব ও ভার্তিকারও। তাদের কী বাস্তবেই দেখা হলো, নাকি, পুরোটাই কল্পনা, তা জানা যাবে সিজন মুক্তি পেলে। গল্পের প্রোটাগনিস্ট বৈভব শেষপর্যন্ত স্বপ্নের পেছনে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেবে? নাকি, সফল হবে সে? যদি ব্যর্থ হয়ে যায়, তার কী 'প্ল্যান বি' আছে? নাকি, জীবন থেমে যাবে ঠিক এখানটিতে এসেই?

নতুন কিছু চরিত্রও রইলো এবারের পর্বে! 

'কোটা ফ্যাক্টরি- সিজন টু' এর অনেক প্রশ্ন। টিজারেও বুদ্বুদের ফেনার মতন আনা হলো কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নকে। চরিত্রগুলোর পরিণতি আর টিপিক্যাল শিক্ষাব্যবস্থার সার্থক পোর্ট্রেয়াল দেখাতে গেলে, এবারের নির্মাণকে যে ছাপিয়ে যেতে হবে গত কিস্তিকেও, তা বলাই বাহুল্য। নির্মাতা ও কুশীলবেরা মিলে কতটুকু কী করেছেন, এখন সেটাই দেখার। সেজন্যেই সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা