
জিতু আহসান খুব জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন তা কিন্তু নয়, তবে দর্শকদের কাছে তিনি একজন সুপরিচিত অভিনেতা। বিশেষ করে সারল্যমাখা চেহারা আর কন্ঠস্বরের জন্য। সে সাথে অভিনয় তো ছিলই। নায়কোচিত ব্যাপার অতটা ছিল না, ঠিক যে কারণেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন যেন পাশের বাড়ির ছেলেটা...
বাবা কিংবদন্তি অভিনেতা সৈয়দ আহসান আলী সিডনী। স্বাভাবিকভাবেই উনার ছেলের প্রতি ছিলো প্রত্যাশা। নির্মাতা থেকে দর্শক- সবারই আলাদা একটা আগ্রহ ছিল তার প্রতি। মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই 'একটি সেতুর গল্প' নাটকে অভিনয় করেন, জিয়া আনসারীর বিখ্যাত নাটক 'জোনাকী জ্বলে'তেও ছিলেন শিশু শিল্পী হিসেবে।
'জোয়ার ভাটা', বাংলাদেশের প্রথম মেগাসিরিয়াল বানিয়েছিলেন বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব আব্দুল্লাহ আল মামুন। বাবার দীর্ঘদিনের সহকর্মীর হাত ধরেই বড় বেলায় পর্দায় উপস্থিত হয়ে বেশ আলোচিত হন তিনি। আব্দুল্লাহ আল মামুন জোয়ার ভাটা ছাড়াও এক জনমে, বাবা, সখী তুমি কার নাটকেও জিতু আহসান কে নিয়েছিলেন। শুধু তিনি নন, হুমায়ুন ফরিদীও তবুও প্রতীক্ষা, চন্দ্রগ্রস্থ, একটি সুন্দর সকাল, পথে যেতে যেতে'র মত নাটকে জিতু আহসান কে নিয়েছিলেন। বিটিভিতে প্রচারিত মোহন খানের তারকাবহুল ধারাবাহিক 'সমুদ্র সীমানায়'তে ছিলেন তিনি অন্যতম অভিনেতা, তার বিপরীতে ছিলেন প্রয়াত মডেল তিন্নী। একুশে টিভিতে সম্প্রচারিত অরুণ চৌধুরীর 'আত্মপ্রকাশ' এ তার অভিনয় এখনো বেশ আলোচিত। আমার প্রিয় বান্ধবী, ঝড়া পাতার কাব্য থেকে আলো আমার আলো'র শিক্ষা সচেতনতামূলক নাটক সহ বিটিভিতে প্রচারিত বহু নাটকে তিনি ছিলেন।

২০১৭ সাল। মুক্তি পেল সুবর্ণা মুস্তাফা-সৌদের ছবি 'গহীন বালুচর।' এই ছবিতে অনেকদিন পর দর্শকেরা তাকে দেখেছিলেন। খল ভূমিকায় তার অভিনয় দেখে সবাই চমকে গিয়েছিলেন। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বিরতি দিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু ফুরিয়ে যান নি। বদরুল আনাম সৌদের আগে ডলস হাউজ, গহীনে ধারাবাহিকেও ছিলেন জিতু আহসান।
জিতু আহসান খুব জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন তা কিন্তু নয়, তবে দর্শকদের কাছে তিনি একজন সুপরিচিত অভিনেতা। বিশেষ করে সারল্যমাখা চেহারা আর কন্ঠস্বরের জন্য। সেই সাথে অভিনয় তো ছিলই। নায়কোচিত ব্যাপার অতটা ছিল না, যে কারনে তিনি হয়ে উঠেছিলেন যেন পাশের বাড়ির ছেলেটা। বলা যায় নতুন শতকে নবীনদের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে আগ্রহ জাগানিয়া। কিন্তু যতটা তাকে নিয়ে আগ্রহ ছিল, সে তুলনায় প্রত্যাশা মিটেছে কম। ক্যারিয়ার যখন সবে শুরু করেছিলেন, তখন ই বাবার মৃত্যুর শোক সইতে হয়। অভিনয় কম করতেন, যা করতেন বেশিরভাগ ছিল নিজের কাছের মানুষদের নির্মানে।
জিতু আহসান কে নিয়ে চাইলেই এখনকার নির্মাতারা আবারো ভাবতে পারেন, তিনি নিশ্চয়ই হতাশ করবেন না৷ তার জন্য শুভকামনা রইলো।