গেম অব থ্রন্স অনেকগুলো চরিত্রকে অনেকগুলো কাজ দিয়ে যায়, সে কাজগুলো আমরা দর্শকরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেই। যে কোন সিরিজ দেখে, গল্প শুনে আমরা দর্শক-পাঠক নিজেদের মতো গল্প সাজাই। কিন্তু গেম অব থ্রন্স আসলে আমাদের হাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা দিয়েছিল। যেটা সিজন ৬ পর্যন্ত ফুলফিল হচ্ছিল, শেষে এসে হয় নি...
গেম অব থ্রন্স শেষ হবার পর এই প্রথম একটানা সবগুলো সিজন রিভিশন দিলাম। প্রায় ১৫-২০ দিনের মতো সময় লাগলো। খুবই অবাক করা বিষয় যে অনেককিছুই নতুন করে আবিষ্কার করেছি। আজ পুরো গেম অব থ্রন্স শেষ করার পর ফিল করেছি যে গেম অব থ্রন্স আসলে কখনো একটানা দেখার জন্য বানানো হয় নি। গেম অব থ্রন্সের গ্রেটনেস এর সিজনের মাঝখানে নেয়া ‘Pause’ গুলোর মাঝে নিহিত। সিরিজের টাইমলাইনের সাথে মাঝখানের গ্যাপগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এই গ্যাপগুলোতে আমরা রেখে যাওয়া প্রশ্নগুলো খুঁজতাম, নিজেদের মতো করে সাজাতাম, আয়রন থ্রনে বসাতাম নিজের পছন্দের রাজাকে। টিরিয়ন যে শেষে এসে বলে মানুষকে একতাবদ্ধ করে, মোটিভেট করে সবচেয়ে বেশি কোন জিনিসটি! ‘গল্প’। গল্পের চেয়ে শক্তিশালী আর কিছু নেই। গেম অব থ্রন্সের গল্পর সাথে আর দশটা টিভি সিরিজের গল্প মেলানো যাবে না এই কারণেই।
গেম অব থ্রন্স অনেকগুলো চরিত্রকে অনেকগুলো কাজ দিয়ে যায়, সে কাজগুলো আমরা দর্শকরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেই। যে কোন সিরিজ দেখে, গল্প শুনে আমরা দর্শক-পাঠক নিজেদের মতো গল্প সাজাই। কিন্তু গেম অব থ্রন্স আসলে আমাদের হাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা দিয়েছিল। যেটা সিজন ৬ পর্যন্ত ফুলফিল হচ্ছিল, শেষে এসে হয় নি। আমাদের রাগ বেশি হয়েছে, উষ্মা প্রকাশ পেয়েছে দর্শক হিসেবে আমরা স্যাটিস্ফাই হই নি এজন্য না, আমাদের স্টোরিটেলার সত্তা স্যাটিসফাই হয় নি এই কারণে। আমাদের মনে হয়েছে আমার গল্পটা ছিনিয়ে নিয়েছে শেষে এসে মেকাররা, গুবলেট পাকিয়ে ফেলেছে।
ব্র্যান দ্য ব্রোকেন কিং হওয়ায় অনেকেই কষ্ট পেয়েছে, বিরক্ত হয়েছে। এবারের রিওয়াচে সবচেয়ে বড় পাওয়া আমার ব্র্যানের কিং হবার প্রপার জাস্টিফিকেশন খুঁজে পাওয়া। আমার যদিও সমস্যা ছিল না ব্র্যান কিং হওয়ায়। কিন্তু এবার আরও ভালভাবে মেলাতে পেরেছি। তার আগে জফ্রি মারা যাবার পর টাইউইন ল্যানিস্টার আর টমেন ব্যারাথিওনের একটা কথোপকথন পড়ে আসা যাক। একটু দীর্ঘ কিন্তু কার্যকরী।
Tywin: Your brother is dead. Do you know what that means? I’m not trying to trick you.
Tommen: It means I’ll become king.
Tywin: Yes, you will become king. What kind of king do you think you’ll be?
Tommen: A good king?
Tywin: Hmm, I think so as well. You’ve got the right temperament for it. But what makes a good king? Hmm? What is a good king’s single most important quality?
Tommen: Holiness?
Tywin: Hmm. Baelor the Blessed was holy. And pious. He built this sept. He also named a six-year-old boy High Septon because he thought the boy could work miracles. He ended up fasting himself into an early grave because ‘food was of this world, and this world was sinful’.
Tommen: Justice?
Tywin: [nods] A good king must be just. Orys the first was just. Everyone applauded his reforms, nobles and commoners alike. He was murdered in his sleep after less than a year, by his own brother. Was that truly just of him, to abandon his subjects to an evil he was too gullible to recognize?
Tommen: No.
Tywin: [Tywin shakes his head in agreement] No.
Tommen: What about strength?
Tywin: [Tywin nods his head approvingly] Yes. Strength. King Robert was strong. He won the rebellion and crushed the Targaryen Dynasty. [Tywin’s voice shifts to sneering condescension] And he attended three small council meetings in seventeen years. He spent his time whoring, and hunting and drinking… until the last two killed him. So, we have a man who starves himself to death; a man who lets his own brother murder him; and a man who thinks that winning and ruling are the same thing. What do they all lack?
Tommen: Wisdom!
Tywin: Yes!
Tommen: Wisdom is what makes a good king.
টাইউইন গেম অব থ্রন্সের সবচেয়ে ক্যারিজম্যাটিক ও প্রভাবশালী চরিত্র। আর কেউ থাকুক না থাকুক যদি টাইউইন জীবিত থাকতো তাহলে অবশ্যই গেম অব থ্রন্সের গল্প ভিন্ন হতো। টাইউইন ল্যানিস্টারের চেয়ে ভালো কেউ বলতে পারে না যে একজন রাজার কেমন হওয়া উচিত, কেমন রাজা হলে তাঁর রাজত্ব দীর্ঘদিন টিকে থাকবে। একজন জ্ঞানী রাজা। শেষে এসে যে অপশনগুলো ছিল সেখানে কিং/কুইন হিসেবে শক্তিশালী কুইন ছিল- ড্যানেরিস টারগারিয়ান। একদিকে ড্রাগন, অন্যদিকে আনসালিড আর ডোথরাকি আর্মি। ড্যানেরিসের সামনে সার্সির আর্মি কখনোই টিকতে পারতো না। তার চেয়ে পাওয়ারফুল আর কেউ ছিল না সেভেন কিংডমে। টাইউইন টমেনকে রবার্টের উদাহরণ দিয়ে বলে যে রবার্টও শক্তিশালি ছিল। কিন্তু তাকে স্মল কাউন্সিল মিটিং এ পাওয়াই যেত না। সে পতিতাদের সাথে আর হান্টিং এ ব্যস্ত থাকতো।
ড্যানেরিসও তেমনি স্মল কাউন্সিলে থাকা টিরিয়ন আর ভ্যারিসের কথা খুব কমই গ্রাহ্য করেছে, সেও জোরাহর সঙ্গ রেখে দারিও নাহারিসের সাথে শারীরিক তুষ্টিতে ব্যস্ত থেকেছে। রবার্ট যেমন লিয়ানাকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে এমন হয়েছিল তেমনি ড্যানিও খাল দ্রগোকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে এমনটা হয়েছে। সাথে টারগারিয়ান ব্লাডের পাগলামি তো ছিলই।
আর ছিল জন স্নো। টাইউইনের প্যারামিটারে জাস্ট কিং। জন জাস্ট ছিল, ন্যায়বিচারক ছিল। অরিস দ্য ফার্স্টের মতো। অরিস যেমন নিজের ভাইয়ের হাতে নিহত হয়েছে তেমনি জনের বুকেও ছুরি ঢুকিয়েছিল অলি। জন ন্যায়বিচারক ছিল বলেই ভালোবাসার মানুষকে হত্যা করেছিল। জন কিং এর জন্য সবচেয়ে বড় দাবীদার হওয়া সত্ত্বেও তাই সে রাজত্ব পায় নি। পেয়েছে ব্র্যান দ্য ব্রোকেন। ওয়াইজ কিং। কারণ সে নিজের পা হারানোর পর কেবল শিখতেই চেয়েছে, জানতেই চেয়েছে। সে জানে সেভেন কিংডমের অতীত ইতিহাস। সে জানে কারা কী ভুল করেছিল। কীভাবে রাজ্যে সুখ ও সমৃদ্ধি আনা যাবে সেটা ব্র্যানের চেয়ে কেউই আসলে ভালো জানার কথা না।
যদি কোন কারণে ব্র্যান না হতো তাহলে যে হতে পারতো রাজা সে হল স্যামওয়েল টার্লি। সে হয় নি কারণ স্যাম মূলত জর্জ আর আর মার্টিন নিজেই। স্যামের চোখ দিয়েই মার্টিন ‘A Song of Ice & Fire’ কে দেখেছেন। তাই তো শেষ পর্বে এসে যখন রাজা নির্বাচনের কথা বলা হল স্যাম বলে উঠলো সাধারণ মানুষের ভোটের কথা। মধ্যযুগেই যেন মার্টিন স্যামের হাত ধরে গণতন্ত্রের ধারণা রেখে গেল। টিরিয়নও ওয়াইজ ছিল কিন্তু সে বোকা, অনেকগুলো ভুল ডিসিশন নিয়ে সে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিল। তাঁর ভুলগুলোর কারণেই তাঁর চরিত্র এতো রঙিন, এতো প্রিয়। ব্র্যান এতো প্রিয় না কারণ ব্র্যান ভুল করে নি, বাকিদের চেয়ে অনেক কম করেছে। সিক্স কিংডমের দায়িত্ব তার হাতেই তাই ঠিক আছে। ব্র্যান দ্য ব্রোকেনের হাত ধরেই ব্রোকেন কিংডম ফিরে পেতে পারে তাঁর জৌলুস। Long May He Reign…